Tuesday 04 March, 2025

সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে বাজারের ফল

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 22:35, 2 March 2025

সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে বাজারের ফল

সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে বাজারের ফল

রোজাকে কেন্দ্র করে চাহিদা বেড়েছে সব ধরণের আমদানিকৃত ফলের। শুল্ক কমানোয় খেজুরের দামে সামান্য স্বস্ত্বি থাকলেও আপেল, কমলা, মাল্টাসহ বিদেশি সব ফলের দাম চড়া। সরকার সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় আমদানি করা এসব ফলের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৮০ টাকা। তবে বাজারে আনারস, কলা, পেয়ারা, বরইয়ের মতো দেশি ফলের সরবরাহ থাকলেও সেখানেও স্বস্তি নেই দামে। এতে বিপত্তিতে পড়েছেন মধ্যবিত্তরা।

২রা মার্চ, শনিবার রমজানের প্রথম দিনে রাজধানীর সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, রামপুরা ও কারওয়ান বাজারের ফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে খুচরা পর্যায়ে বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। একদিকে ডলারের দাম বেশি। শুল্কায়নের ক্ষেত্রেও কিছু জটিলতা আছে। বাজারে এসবের প্রভাব পড়েছে।

এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার একদফা শুল্ক-ভ্যাট বাড়িয়েছে। বিদেশি ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতি কেজিতে মাল্টার দাম বেড়েছে ৫০-৮০ টাকা। বাজারে দেশি মাল্টার সরবরাহ কম, তাতে ২২০ টাকা কেজির আমদানি করা মাল্টা কিনতে হচ্ছে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। কোথাও কোথাও দাম আরও বেশি চাওয়া হচ্ছে।

এছাড়া, বিদেশি কমলার দাম পড়ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। কমলার দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ থেকে ৭০ টাকা। বাড়তি আপেলের দামও। আপেলের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। বাজারে সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজানে খেজুরের পাশাপাশি মাল্টা, কমলার মতো রসালো ফলের চাহিদা বেশি থাকে। ঠিক রমজানের আগেই বেড়েছে এই ফলের দাম। তবে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা স্থিতিশীল আছে আঙুরের। বাজারে এখন দুই পদের আঙুর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে সবুজ আঙুরের দাম ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি। আর ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে কালো আঙুর।

বিদেশি ফলের দাম বেশি হওয়ার কারণে বেড়েছে দেশি ফলের চাহিদা। এই সুযোগে দেশি ফলের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।

বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা ৮০-১৩০ টাকা, তরমুজ ৮০-১০০ টাকা কেজি ও আনারস প্রকারভেদে ৬০-১০০ টাকা প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে ১২০-১৫০ টাকা কেজি, বাঙ্গি প্রতিপিস ১০০-১৫০, বেল ৮০-১২০ পিস, কলা ৮০ থেকে ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।

বিদেশি ফলের দাম বাড়ার কারণে দেশি ফলের দাম বেড়েছে বলে জানিয়ে এক ক্রেতা হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে পেয়ারা কিনেছি ৮০ টাকা, আজ ১২০ টাকা। বরইয়ের দাম ১৫০ টাকায় ঠেকেছে, যা ৫০-৬০ টাকা কম ছিল। বিদেশি আপেল কমলার দামের সঙ্গে এগুলোর দামও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

মোহাম্মদপুরের বাজারে ফল বিক্রেতা জয়নাল আবেদিন বলেন, পাইকারি বাজারে ফলের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। তবে সরবরাহ ভালো।

এদিকে ঢাকা মহানগর ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুল করিম জানান বলেন, ‘একদিকে ডলারের দাম বেশি। শুল্কায়নের ক্ষেত্রেও কিছু জটিলতা আছে। বাজারে এসবের প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার একদফা শুল্ক-ভ্যাট বাড়িয়েছে। বিদেশি ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।’

এই বর্ধিত শুল্কের কারণে খুচরা বাজারে আপেল, কমলা ও আঙুরের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে। রমজানের আগে ফল আমদানি কমেছে। যার কারণে এখন দামের ওপর তার বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে বলে মন্তব্য করেন এ ব্যবসায়ী।