Tuesday 29 April, 2025

লোডশেডিং না দিলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: উপদেষ্টা ফাওজুল

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 22:20, 27 April 2025

লোডশেডিং না দিলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: উপদেষ্টা ফাওজুল

লোডশেডিং না দিলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: উপদেষ্টা ফাওজুল

বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমাতে লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে বলে পরোক্ষভাবে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন, বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেছেন কিছু লোডশেডিং দেওয়ার জন্য। না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে।

আজ ২৭শে এপ্রিল, রোববার সচিবালয়ে গ্রিড বিপর্যয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। গরমের কারণে সামনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত চাহিদা বাড়বে। তখন তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন আরো বাড়ানো হবে।’

এ সময় তিনি জানান, বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেছেন কিছু লোডশেডিং দেওয়ার জন্য। না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে।

উপদেষ্টা বলেন, যে হারে এসি লাগানো হচ্ছে সে হারে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়েনি। অনেকে বিনা কারণে লাইট, ফ্যান ও এসি চালু করে রাখে। গ্রিডের স্ট্যাবলিটির জন্য কাজ করছে মন্ত্রণালয়। বিদ্যুৎ সরবরাহে এখন কোনো সংকট নেই।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমাদের গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে, আবার এলএনজি আনতে যে আর্থিক সামর্থ প্রয়োজন তাও কম। তাই চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস দেওয়া যাচ্ছে না।’

এদিকে, উপদেষ্টা যে বর্তমানে ১৬ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের দাবি করেছেন, তা সত্য নয়- এমন তথ্য উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। আজ ২৭শে এপ্রিল, দুপুর ৩ টার সময় ১৪ হাজার ৭৬১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটই ভারত থেকে আমদানিকৃত।

আর পিডিবির উৎপাদন ১২ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের চেয়ে কিছুটা বেশি। এপ্রিল মাসে একদিনও ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি। অনুমান হিসেবে আজকের বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াট।

এখন প্রচন্ডা তাপপ্রবাহ চলছে। এমন সময়েই ২ হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং চলছে দেশে। গ্রামাঞ্চলের অবস্থা সত্যিই করুণ। সেখানকার প্রকৃত চিত্র গণমাধ্যমেও উঠে আসছে না।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এসেছিল বাংলাদেশ। সেসময় ২৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন সক্ষমতা ছিল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর।

উল্লেখ্য, জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে দেশের বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জেলা প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বিদ্যুৎহীন হয়ে যায়। অবশ্য শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে দুএকটি জেলায় বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করে। গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির আওতাধীন খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা বাগেরহাট, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা ভোলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী এই ১৫ জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে যায়।

এসব স্থানে ১৫ মিনিট থেকে ৯৬ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।