ঢাকা থেকে নিখোঁজ, ময়মনসিংহে মিলল আওয়ামী লীগ নেতার লাশ
আরিফুর রহমান লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্বাচিত সদস্য (মেম্বার) ছিলেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার মিরপুর-১০ নাম্বার থেকে কতিপয় দুষ্কৃতকারী আরিফকে তুলে নিয়ে যায়। ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা তারাকান্দা উপজেলার পিঠাসূতা চৌরাস্তা সড়কের পাশ থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটি আরিফুর রহমানের বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলাধীন তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
আরিফের ভগ্নিপতি সেলিম হোসেনসহ পরিবারের সদস্যরা জানান, আরিফ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি এলাকায় রড-সিমেন্ট ও ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পরিবারের সাথে ঢাকায় থাকতেন। ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরিবার নিয়ে বাসা থেকে বেড়াতে বের হন। রাতে স্ত্রীকে মিরপুর-১ নাম্বারে নামিয়ে দিয়ে তিনি মিরপুর-১০ নাম্বারে যান। সেখানে পরিচিত এক দোকানে বসেন।
রাতে তার মোবাইল নাম্বার থেকে স্ত্রীর কাছে বিকাশে ১০ হাজার টাকা চেয়ে একটি এসএমএস আসে। এরপর স্ত্রী আরিফকে কল দিলেও কোনো প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ইংরেজি নববর্ষের প্রথমদিন ১ জানুয়ারি সকালে মিরপুর থানায় আরিফের স্ত্রী স্বামীর নিখোঁজের খবর জানাতে গেলে ময়মনসিংহে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের খবর পান পুলিশের কাছ থেকে। পরে ছবি দেখে পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত হন।
আরিফের ভাই ফরহাদ হোসেন বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের মুখ রক্তাক্ত, জখমের চিহ্ন ছিল। ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. টিপু সুলতান বলেন, সকালে সড়কের পাশের ক্ষেতে মরদেহ দেখে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তিনি বলেন, নিহতের বাম চোখের ওপর ও নাকে চামড়া ছিলে যাওয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অন্য কোথাও হত্যার পর ভোরে তার লাশ ফেলে পালিয়েছে হত্যাকারীরা।
এদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার আকতার হোসেন জানিয়েছেন, ময়মনসিংহে লক্ষ্মীপুরের এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন। তবে যেখান থেকে তিনি নিখোঁজ হয়েছেন, সেখানে সংশ্লিষ্ট থানায় এ ব্যাপারে মামলা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত খবর নিয়ে পরে জানানো হবে।