বাটলার থাকলে গণ-অবসরের হুমকি বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের
অনেকদিন ধরেই কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে আসছেন বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। তার অধীনে না খেলার বিষয়টি বলে আসছিলেন সাবিনা খাতুন-মাসুরা আক্তাররা। কিন্তু বাফুফে সেই বাটলারকেই ২ বছরের জন্য আবার কোচ করেছে। নতুন মেয়াদে দায়িত্ব পেয়ে বাংলাদেশে এসে তাই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন কোচ বাটলার।
কিন্তু তার জিম সেশনে অংশ নেননি জাতীয় দলের অনেক খেলোয়াড়। ইংলিশ কোচের অধীনে কোনো ক্যাম্প করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এমনকি বাটলারকে কোচ হিসেবে দায়িত্বে রাখলে একযোগে অবসর নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন সাবিনা-মনিকা চাকমারা। মেয়েরা অনুশীলন করবেন, তবে দেশি কোচের অধীনে।
আজ বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে মাসুরা পারভীন বলেছেন, ‘আমরা একবারও বলিনি অনুশীলন করব না। আমরা বলেছি, ওই কোচের সঙ্গে অনুশীলন করব না। আমরা বলেছিলাম, উনার শিডিউলে অনুশীলন দেশি কোচরা করাক। উনি যেহেতু আসছে, বিশ্রামে থাকুক।
সভাপতি ফিরলে আমরা আলোচনায় বসব। মেয়েরা অনুশীলনের চেয়ে বেশি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে মনোযোগী থাকেন এমন অভিযোগ করেছিলেন বাটলার। তার সেই অভিযোগের বিষয়ে মাসুরা বলেছেন, ‘আমরা যেহেতু ফেসবুকে এক্টিভ থাকি, আমাদের কাছে ফোন থাকে। আমাদের কারো কাছে প্রমাণের, বলার কিছু নেই। আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছি, এই কোচের অধীনে অনুশীলন করব না।
এতকিছু ভেঙে বলা সম্ভব না। এই কোচের সঙ্গে কাজ করব না। কোচ চেঞ্জ করলে আমরা অনুশীলন করব।’
খেলোয়াড়দের নিয়ে বাটলার কটুক্তি করায় তা মেনে নিতে পারছেন না সাবিনা। নিজেদের আত্মসম্মানে আঘাত করেছে এমনটা জানিয়ে অধিনায়ক বলেছেন, ‘একটা বিষয়ই বলার, নিজেদের প্রমাণের কিছু নেই। ব্যাপারটা আত্মসম্মানের। (এরপর আবেগপ্রবণ হয়ে যান সাবিনা)। আমরা দেশের জন্য খেলি। সেই তাদের নিয়ে কটুক্তি করছে, মেয়েদের জন্য এটা অসম্ভব।’
বাটলারকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় জানিয়ে দেশের হয়ে আবারও লড়তে চান সাবিনা। তিনি বলেছেন, ‘পেশাদারিত্ব আমাদের ধর্ম। এটা আমাদের মেনে চলতেই হবে। ব্যাপার হচ্ছে, মেয়েদের প্রমাণ করার কিছু নেই। সবকিছু বলে বলে বোঝানো যায় না। আমরা কিছু একটা নিয়ে বার বার অভিযোগ করছি বিধায় কিছু একটা আছে সেখানে। আমরা এই জায়গায় কমফোর্টেবল না। উনি প্রোফাইল ভারি কোচ সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই। আপনাদের কাছে কি মনে হয়, কোচ এবং আমাদের উভয় দিকে কি সফট কর্নার থাকবে? অবশ্যই থাকবে না। আমরা কোচকে সম্মান জানিয়ে নিজেদের সম্মান নিয়ে এখান থেকে যেতে চাই।’
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়ে কৃষ্ণা বলেছেন, ‘আমাদের সমস্যা কিন্তু সাফের আগেই থেকে সমস্যা চলছিল। এটা নিয়ে আমাদের কিরণ আপা ও সাবেক প্রেসিডেন্টককে বলা হয়েছে। সাফে যাওয়ার আগে বলেছিল, কোচ চেঞ্জ করা হবে। এখানকার স্থানীয় কোচেরা সবই জানে, কিন্তু এখন মুখ খুলছে না। এখন আমাদের যদি খেলা ধরে রাখতে হয় তাহলে এই কাজ ছাড়া উপায় নেই।’
খেলোয়াড়দের নিয়ে বাটলার কটূক্তি করেন এমন অভিযোগ তুলে কৃষ্ণা আরও বলেছেন, ‘আমরা মাঠে খুবই মানসিক চাপে থাকি। বিশেষ করে উনি হচ্ছে আমাদের অঙ্গভঙ্গি...খুব সকালে উঠতে হয় আমাদের, একটু ক্যাজুয়াল থাকতেই পারি। কিন্তু উনি আমাদের নিয়ে কটুক্তি করে। যেটার কারণে আমরা হতাশ হয়ে যাই।’
নেপালে দ্বিতীয়বার নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের সময় বাটলার জানিয়েছিলেন, খেলোয়াড়রা শৃঙ্খল নন। কোচের সেই অভিযোগের বিষয়ে মারিয়া মান্দা বলেছেন, ‘আমরা যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতাম তাহলে এত বছর ধরে বয়সভিত্তিক, জাতীয় দলে খেলে আসতে পারতাম না।