
হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন দুই আওয়ামী লীগ নেত্রী
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হুমকির অভিযোগের মামলায় যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভানেত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লিপি খান ভরসাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। মোনালিসা সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী। সোমবার (২৪ মার্চ) বিচারপতি মো.ইকবাল কবির ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ উভয় মামলায় রুলসহ এ জামিন আদেশ দেন।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা এক মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার ইস্কাটন এলাকা থেকে মোনালিসা ইসলামকে আটক করে পুলিশ। পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর আমলি আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আমলি আদালতের বিচারক বেগম শারমিন নাহার তাকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ২০ ফেব্রুয়ারি তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
পরে জামিন আবেদনের পর দায়রা জজ আদালত ১৬ মার্চ তার আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর ১৮ মার্চ হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দায়ের করা একটি মামলায় ১২ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি করা হয় সৈয়দা মোনালিসা ইসলামকে। ১৯ আগস্ট মামলাটি করেছিলেন মেহেরপুর সদরের মো. হাসনাত জামান। ৪ আগস্টে মেহেরপুরের কলেজ মোড়, চুলকুনি মোড় ও কোর্ট মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও অভিভাবকদের অবস্থান কর্মসূচিতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এ মামলাটি করা হয়। অন্যদিকে, ১৬ মার্চ সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর গুলশান-২ এর ১১৭ নম্বর রোডের ৯/বি ফ্ল্যাট থেকে লিপি খান ভরসাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইদিন রাত সাড়ে ৯টায় রংপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক শোয়েবুর রহমান লিপি খান ভরসাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে মহানগর জজ আদালতে জামিন আবেদন করলে ১৮ মার্চ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর ২০ মার্চ তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।
গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত রংপুর মহানগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুনের করা হত্যাচেষ্টা মামলার ১৭৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি লিপি খান ভরসা। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ঢাকায় অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছিলেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
লিপি খান ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র কিনলেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ কোনও পদে ছিলেন না।
এই দুই নেত্রীর মামলা দুটিতে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো.আল আমিন ও মো.মিজানুর রহমান। এ জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।