
মহান স্বাধীনতা দিবস আজ
পাকিস্তানি শোষণ-বঞ্চনার শৃঙ্খল ভেঙে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে স্বাধীন স্বদেশ বিনির্মাণের ৫৪তম বার্ষিকীতে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে গোটা দেশ সেজেছে লাল-সবুজের বর্ণিল সাজে। শহিদদের স্মরণ ও স্বাধীনতার আনন্দক্ষণ উদযাপনে প্রস্তুত পুরো জাতি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাই, বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াক এক নতুন বাংলাদেশ—এই আমার প্রত্যাশা।”
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহত করা অপরিহার্য। রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে সাম্য, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন প্রজন্মের জন্য নিরাপদ, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব সবার।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশের উন্নয়ন, শান্তি এবং সমৃদ্ধির পথে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।”
শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস
আজ বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে ঢাকায় গণহত্যা চালায়। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, যা তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইপিআরের বেতারে প্রচারিত হয়।
এরপর নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহিদের আত্মদান, আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ও জাতির অসামান্য ত্যাগের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা পায়।
২৫ মার্চ গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করেছে বাংলাদেশ। স্মরণে এক মিনিট বাতি নিভিয়ে রাখার আয়োজন করা হয়। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জাতি গভীর শ্রদ্ধায় মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের স্মরণ করছে।
উদযাপন ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
স্বাধীনতা দিবসে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে দিনটি। জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এবার এমন সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী উদযাপন হচ্ছে, যখন মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ মাঠের রাজনীতিতে অনুপস্থিত থাকলেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দলটি অঙ্গ-সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মাধ্যমে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ আজ বিশ্বদরবারে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির রোল মডেল। স্বাধীনতা দিবসে জাতি শপথ নিচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে আরও এগিয়ে নেওয়ার।