Wednesday 02 April, 2025

ধর্ষণ ইস্যুকে পুঁজি নারী নেতৃত্বকে মাঠে নামালো জামায়াতে ইসলাম

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 21:54, 15 March 2025

ধর্ষণ ইস্যুকে পুঁজি নারী নেতৃত্বকে মাঠে নামালো জামায়াতে ইসলাম

ধর্ষণ ইস্যুকে পুঁজি নারী নেতৃত্বকে মাঠে নামালো জামায়াতে ইসলাম

আজ শনিবার সকাল ১০:০০ থেকে ১১:১০ ঘটিকা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের উদ্যোগে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধর্ষণ নামক সমাজের এই ভয়াবহ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে পাঁচটি দাবি এবং শিশু আছিয়াকে পাশবিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে প্রায় ১০০ থেকে ১২৫ জন নারী অংশগ্রহণ করেন এবং সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানান।

মানববন্ধনে উত্থাপিত পাঁচটি দাবির মধ্যে রয়েছে- “বেঁচে থাকা ও নিরাপত্তার অধিকার দাও”, “ধর্ষকদের প্রকাশ্য জনসম্মুখে ফাঁসি চাই, দিতে হবে”, “ধর্ষণ মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি কর, করতে হবে”, “ধর্ষণ মামলায় জামিন বিধান বাতিল কর, করতে হবে” এবং “ধর্ষণ মামলায় এক বিধান, এক শাস্তি; ধর্ষককে ফাঁসি দিবি, দিতে হবে”। এসব দাবি নিয়ে উপস্থিত নারীরা স্লোগানে মুখরিত করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপিকা নুরন্নিসা সিদ্দিকা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য এডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী এবং নাজমুন্নাহার নীল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি সাঈদা রুম্মান ও মার্জিয়া বেগম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য রোজিনা আখতার, আয়েশা সিদ্দিকা পারভীন, সালমা সুলতানা, ইরানি আখতার, মাহবুবা জাহান, খোন্দকার আয়েশা সিদ্দিকা, সুফিয়া জামালসহ মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধনে প্রধান বক্তা অধ্যাপিকা নুরন্নিসা সিদ্দিকা বলেন, “শিশু আছিয়া হত্যার মামলার রায় এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে এবং আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। ধর্ষণের মতো অপরাধ দূর করতে ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসির বিধান চালু করা জরুরি।” তিনি ধর্মহীনতা ও নৈতিকতাহীন শিক্ষাকে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের জন্য দায়ী করে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে জনগণকে উজ্জীবিত করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, “ধর্ষণ মামলায় জামিন বাতিল করে কেবল মৃত্যুদণ্ডের বিধান করতে হবে। ধর্ষকদের নিজ এলাকায় জনসম্মুখে ফাঁসি দিলে এই অপরাধ কমে আসবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি ও জামিন বাতিলের ঘোষণা বাস্তবায়ন না হলে নারী সমাজ কঠোর আন্দোলনে নামবে।”

এডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী বলেন, “শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার বিচার দ্রুত বিচার আইনে করতে হবে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ধর্ষণের বিস্তার ঘটিয়েছে। ছাত্রলীগ নেতারা ধর্ষণের পর মিষ্টি বিতরণ করলেও তাদের বিচার হয়নি।” তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “এই পাঁচ দাবি বাস্তবায়ন না হলে নারী সমাজকে রাজপথে নামতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের আগে নৈতিকতার সংস্কার জরুরি।”

নাজমুন্নাহার নীল বলেন, “সমাজে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভাবের কারণে ধর্ষণ বেড়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতার কোনো উপাদান নেই। গত ১০ বছরে সাড়ে ৩ হাজার শিশু ধর্ষণের মামলা হলেও একটিরও বিচার হয়নি।” তিনি সকল ধর্ষণ মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তির দাবি জানান।

এই মানববন্ধনের মাধ্যমে নারী সমাজ সরকারের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরে সমাজ থেকে ধর্ষণ নামক ব্যাধি দূর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।