
আড়াইহাজারে মধ্যরাতে ঘরে বিস্ফোরণ, নিহত ২ নারী
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় অবৈধ গ্যাসলাইনের লিকেজ থেকে সৃষ্ট বিস্ফোরণে কানিজ খাদিজা নিপা (২৫) ও চায়না আক্তার সাহেমা (৩৫) নামে দুই নারী নিহত হয়েছেন। মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় বর্তমানে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আরও দু’জন।
গত শুক্রবার মধ্যরাতে আড়াইহাজার পৌরসভার দিঘিরপাড় এলাকার সরকারি সফর আলীর কলেজের পূর্ব পাশে একটি চারতলা ভবনের চতুর্থ তলায় এ বিস্ফোরণ ঘটে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, কানিজ খাদিজা নিপা গতকাল সকালে মারা যান। দুপুরে মারা যান চায়না আক্তার সাহেমা। দু’জনের শরীরই ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। যে দু’জন চিকিৎসাধীন, তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। নিহত নিপা গোপালদী পৌরসভার লক্ষ্মীবরদী গ্রামের কেশর মোল্লার মেয়ে। সাহেমা টাঙ্গাইল সদরের সোহান মিয়ার স্ত্রী।
নিপার বোন ইভা ইসলাম বলেন, ‘নিপা আড়াইহাজার পৌরসভার দিঘিরপাড় এলাকায় ছানাউল্লাহ নামে এক ব্যক্তির চারতলা ভবনের চতুর্থ তলায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে একাই থাকত। স্থানীয় ফকির ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানায় কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করত। পাশের রুমে থাকত একই কারখানার সুপারভাইজার জিয়াউর রহমান সোহান ও তাঁর স্ত্রী সাহেমা আক্তার।
শুক্রবার মা ও আমি নিপার বাসায় গিয়েছিলাম। মা রাতে সেখানে ছিলেন, আমি খাবার খেয়ে চলে আসি। পরে রাত ১১টার দিকে খবর পাই সেখানে বিস্ফোরণের পর আগুন লেগেছে। গিয়ে দেখি আমার মা, বোন ও তাদের পাশের রুমের সোহান মিয়া ও তাঁর স্ত্রী সাহেমা দগ্ধ হয়েছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে স্থানান্তর করা হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। সকালে আমার বোন নিপা মারা যায়।
দুপুরের দিকে সাহেমা মারা যান। অন্যদের অবস্থাও ভালো না। ওই বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। বাসায় গ্যাসের লাইন ও সিলিন্ডার ছিল। আড়াইহাজার ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শাজাহান হোসেন বলেন, রাত ১১টার দিকে বিস্ফোরণের খবর দিলে ছয় মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছি। তবে আমাদের আসার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছিল। আমরা ধারণা করছি, ফ্লাটে গ্যাসের লিকেজ ছিল। কেউ একজন মোবাইল চার্জ দেওয়ার সময় বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ হলে জমে থাকা গ্যাসের মাধ্যমে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব বলেন, ওই ভবনটিতে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ছিল বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে। গ্যাস লিকেজ নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে কী কারণে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।