
সুদানে আধাসামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে নিহত অন্তত ৩০
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর অঞ্চলের অবরুদ্ধ শহর এল-ফাশেরে আধাসামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে রবিবার ৩০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত এবং আরো অনেকে আহত হয়েছে। স্থানীয় অধিকারকর্মীদের বরাত দিয়ে এএফপি সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় প্রতিরোধ কমিটি এদিন জানায়, হামলায় ‘ভারী গোলাবর্ষণ’ করা হয় এবং তা মূলত শহরের আবাসিক এলাকাগুলোকে লক্ষ্য করেই চালানো হয়। এই কমিটি সুদানের বিভিন্ন স্থানে স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা সমন্বয় করে থাকে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে চলমান যুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ গৃহচ্যুত হয়েছে এবং জাতিসংঘ এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের এখনো দারফুর অঞ্চলের একমাত্র বড় শহর, যেটি আরএসএফ এখনো দখল করতে পারেনি। গত সপ্তাহে আরএসএফ শহরটি ও পাশের দুটি বাস্তুচ্যুত শিবির—জমজম ও আবু শোকে ফের হামলা চালায়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এতে চার শতাধিক মানুষ নিহত এবং প্রায় চার লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
রক্তক্ষয়ী স্থল লড়াইয়ের মাধ্যমে আরএসএফ জমজম শিবিরের নিয়ন্ত্রণ নেয়, যেখানে সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর তথ্য মতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। অন্যদিকে জাতিসংঘের মতে, বাস্তুচ্যুত মানুষের বেশির ভাগই উত্তর দিকে এল-ফাশের শহরে অথবা শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার পশ্চিমের ছোট শহর তাওয়িলায় পালিয়ে যায়।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেড় লাখ মানুষ এল-ফাশেরে এবং আরো এক লাখ ৮০ হাজার মানুষ তাওয়িলায় গিয়ে উঠেছে। এই দুটি শহর দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় থাকা সত্ত্বেও সেখানে কার্যত কোনো মানবিক সহায়তা পৌঁছচ্ছে না।
জাতিসংঘের মানবিক প্রধান টম ফ্লেচার সোমবার এই পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, তিনি সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলোর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং উভয়েই ‘মানবিক সহায়তা প্রবেশের পূর্ণ সুযোগ দিতে সম্মত হয়েছেন’। তবে যুদ্ধ চলাকালে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ—উভয়ের বিরুদ্ধেই সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।