কিংবদন্তি ‘নায়ক রাজ’ রাজ্জাকের জন্মদিন আজ
কলকাতার এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া একটি শিশু বাংলা চলচ্চিত্রের মহারাজায় পরিণত হবেন, এটা কে জানত? কে জানত বাউণ্ডুলে স্বভাবের সেই ছেলেটি একদিন বাংলা চলচ্চিত্রের রাজ করবেন! কিন্তু অদম্য ইচ্ছা, কঠোর পরিশ্রম, আর একাগ্রতা মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে সফলতার চূড়ান্ত শিখরে। সেটার প্রমাণ রেখে গেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের নায়ক রাজ রাজ্জাক। সিনেমার নায়ক হওয়ার অদম্য ইচ্ছা তাকে বানিয়েছে জিরো থেকে হিরো। নিজ চেষ্টা ও স্বপ্রতিভায় তিনি অভিনয়ের বিশাল ভুবনে জায়গা করে নিয়েছিলেন।
পৃথিবীর পাঠ চুকিয়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে, কিন্তু আজও দর্শক হৃদয়ে অমর তিনি।
আজ জন্মদিন বাংলা চলচ্চিত্রের মধ্যমণি ও কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ্জাকের। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন রাজ্জাক। নায়করাজ নামে পরিচিত হলেও তার পরিবারিক নাম আবদুর রাজ্জাক।
সিনেমার নায়ক হওয়ার ইচ্ছে ছিল আগে থেকেই। সেই লক্ষ্য নিয়েই ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়ে সিনেমার ওপর পড়াশুনা ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন রাজ্জাক। এরপর কলকাতায় ফিরে এসে ‘শিলালিপি’ ও আরও একটি সিনেমায় অভিনয় করেন।
১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কবলে পড়ে ঢাকায় চলে আসেন রাজ্জাক ও তার পরিবার।
ঢাকায় এসে ‘উজালা’ সিনেমা দিয়ে পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেই থেকে বদলাতে শুরু করে তার ভাগ্য। রাজ্জাকের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। নায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে। তারপর থেকে একাধারে অভিনয়, প্রযোজনা ও পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গন দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘আলোর মিছিল’, ‘ছুটির ঘণ্টা’সহ মোট ৩০০টির বেশি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক।
১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সঙ্গে ঢালিউডে সেরা নায়ক হয়ে অভিনয় করেন তিনি। রাজ্জাক পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র। গড়ে তোলেন রাজলক্ষী প্রোডাকশন হাউজ। প্রযোজক হিসেবে তার যাত্রা হয় ‘রংবাজ’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর বেশ কিছু সিনেমা প্রযোজনাও করেছেন এই কিংবদন্তি। রাজ্জাক ১৯৬২ সালে খায়রুন নেসার (লক্ষ্মী) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেন রেজাউল করিম (বাপ্পারাজ), খালিদ হোসেইন (সম্রাট), নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসেন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না।