Wednesday 22 January, 2025

৯০ দিনের জন্য মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করলেন ট্রাম্প

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 22:42, 21 January 2025

৯০ দিনের জন্য মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করলেন ট্রাম্প

৯০ দিনের জন্য মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য সব বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। সোমবার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। তার প্রশাসনের নীতির সঙ্গে এসব কর্মসূচি সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা পর্যালোচনার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে তহবিল স্থগিত করার আদেশের তাৎক্ষণিক প্রভাব কী হতে পারে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

কারণ অনেক কর্মসূচির জন্য ইতিমধ্যেই কংগ্রেস কর্তৃক তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে, যা হয় বাধ্যতামূলক অথবা ইতিমধ্যেই ব্যয় করা হয়েছে। তার ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনে স্বাক্ষরিত বেশ কয়েকটি আদেশের মধ্যে একটি ‘বৈদেশিক সাহায্য এবং আমলাতন্ত্র’, ট্রাম্প এর সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, এটা আমেরিকান স্বার্থ এবং মূল্যবোধের বিরোধিতা করে। তিনি আরো বলেন, এই ধরনের কর্মসূচি ‘বিশ্ব শান্তিকে অস্থিতিশীল করে তোলে’।

ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, প্রেসিডেন্টের বৈদেশিক নীতির উদ্দেশ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে কোনো মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা দেওয়া হবে না। 
গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তিনটি মূল প্রশ্নের মাধ্যমে সব ব্যয় এবং কর্মসূচিকে ন্যায্যতা দেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনটি মূল প্রশ্ন হলো, এটি কি আমেরিকার জন্য নিরাপদ? এটি কি আমেরিকাকে শক্তিশালী করবে? এটি কি আমেরিকাকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলবে?

এই আদেশের অধীনে রুবিও বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি মূল্যায়ন করার ক্ষমতা পাবেন। পররাষ্ট্র দপ্তর এবং মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এই ধরনের সাহায্য তত্ত্বাবধানকারী প্রাথমিক সংস্থা হিসেবে রয়ে গেছে।

ট্রাম্প ধারাবাহিকভাবিই বিদেশি সাহায্যের সমালোচনা করে আসছেন। যদিও এটি সাধারণত ফেডারেল বাজেটের প্রায় ১ শতাংশ হয়ে থাকে। তবে ব্যতিক্রম একটিই, ইউক্রেনকে প্রদত্ত ব্যাপক সামরিক সহায়তা। ট্রাম্প রাশিয়ার-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রতিরক্ষার জন্য ইউক্রেনকে প্রেরিত সহায়তার পরিমাণ নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বাইডেন প্রশাসনের অধীনে বিদেশি সাহায্যের সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলে দুর্যোগ ত্রাণ, স্বাস্থ্য এবং গণতন্ত্রপন্থী উদ্যোগসহ নানা কর্মসূচির জন্য ৬৮ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।

তবে মার্কিন সাহায্যের প্রধান প্রাপক, যেমন ইসরায়েল (বার্ষিক ৩.৩ বিলিয়ন ডলার ), মিসর (বার্ষিক ১.৫ বিলিয়ন ডলার) এবং জর্দান (বার্ষিক ১.৭ বিলিয়ন ডলার) দীর্ঘস্থায়ী চুক্তির কারণে উল্লেখযোগ্য কাটছাঁটের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা কম। ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান প্রশাসন ঐতিহ্যগতভাবে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে তহবিল হ্রাস বা কাটছাঁটের তালিকায় রেখেছে। এর আগে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলে অর্থ প্রদান এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে তহবিল স্থগিত করা হয়েছিল।

ট্রাম্পের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বেরিয়ে গেছে এবং এ সম্পর্কিত আর্থিক বাধ্যবাধকতা বন্ধ করে দিয়েছে। গত মার্চ মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরিত একটি বিলে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর জন্য মার্কিন অর্থায়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।