পরীক্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসএসসির প্রশ্নপত্র ফেসবুকে

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রশ্নপত্র আপলোড করার পর বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা অভিযোগ করেছেন, সরকারের শিথিল মনোভাব এবং নজরদারির অভাবেই বারবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। এতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি প্রকাশ পেলেও, অনেকেই মনে করছেন এটি পরীক্ষার শুরু হওয়ার আগেই ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

জানা গেছে, মঙ্গলবার ‘আমাদের চৌহালী’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে পরীক্ষার শুরু হতেই প্রশ্নপত্রটি পোস্ট করা হয়। বিষয়টি নজরে আসার পর উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় বেলা ১১টার দিকে ওই পোস্ট মুছে ফেলা হয়। তবে তার আগেই শত শত মানুষ সেটি ডাউনলোড করে নেয়।

‘আমাদের চৌহালী’ ফেসবুক গ্রুপটির অ্যাডমিন মনিরুল ইসলাম চৌহালীর খাসপুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং গত ১০ বছর ধরে গ্রুপটি পরিচালনা করছেন।

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ব্যবস্থা নিতে চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের পরও পরীক্ষায় এর কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান তিনি।

চৌহালী থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।

এ বিষয়ে গ্রুপ অ্যাডমিন মনিরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সানজিদা নামের একটি আইডি থেকে ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রশ্ন গ্রুপে পোস্ট করা হয়। কিছু সময় পর ওই ব্যবহারকারী নিজেই পোস্টটি মুছে ফেলেন। তবে সানজিদা নামের আইডিটি কার, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটি ভুয়া আইডিও হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি, তিনি ঘটনাটিকে ‘বিব্রতকর’ বলে উল্লেখ করেন।

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম জানান, চৌহালীতে এসএসসির ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে—এমন খবর পেয়েছেন। তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় যে কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত, তবে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, প্রশ্ন ফাঁস হলেও পরীক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়েনি বলে তিনি দাবি করেন।