
‘নব্য ফ্যাসিবাদ’ প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্যের ডাক জি এম কাদেরের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, দেশে ‘নব্য ফ্যাসিবাদ’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এর দোসররা সারাদেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার শাসনের মতোই বর্তমান সরকার একতরফা নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে এবং বিরোধী মতকে দমন করছে।
২০শে এপ্রিল, রোববার বনানীর দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভার দ্বিতীয় দিনে এসব অভিযোগ করেন জি এম কাদের।
তিনি বলেন, “দেশে এখন আর গণতন্ত্র নেই, আছে ভয়, আতঙ্ক আর অস্থিরতা। মানুষ জানে না স্বামী অফিস থেকে ফিরবে কি না, মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিরাপদে ফিরবে কি না। দেশের এমন ভয়াবহ অবস্থায় আমরা পৌঁছেছি।”
নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে সরকারের উদ্যোগকে ‘অবাস্তব’ আখ্যা দিয়ে কাদের বলেন, “সরকার দেশের ৫০ শতাংশ মানুষকে বাদ দিয়ে সংস্কারের কথা বলছে। এটা কোনোভাবেই বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এখন যারা সংস্কার করছেন, তারা যেন এলিয়েন—অন্য গ্রহ থেকে আসা লোক।”
তিনি আরও বলেন, “পেশাজীবী সংগঠনগুলোও এখন সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে পড়েছে। যারা আন্দোলন করেছিল, শহীদ হয়েছিল, তারা এই ফ্যাসিবাদের জন্য জীবন দেয়নি।”
জি এম কাদের বলেন, “রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, বরং বেড়েছে। অফিস-আদালতে দুর্নীতি আরও ব্যাপক। মিছিল-মিটিং করতে দেয়া হচ্ছে না। আর সরকারদলীয়রা ফাইভস্টার হোটেলে ইফতার করছে, আমাদের নেতাকর্মীদের ছোট হোটেলের অনুষ্ঠানে হামলা হচ্ছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “ছাত্রলীগের নাম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের বিবস্ত্র করে মারধর করা হচ্ছে। সব ছাত্রলীগ কর্মী কি অপরাধী? আবার মামলায় নিরপরাধ লোকদের অজ্ঞাত আসামি করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। সরকার অফিসিয়ালি আদালতকে নির্দেশ দিচ্ছে, বিরোধীদের জামিন না দিতে।”
তিনি বলেন, “একটি সাংবাদিক জানিয়েছেন, একটি অফিসে সরকারঘনিষ্ঠ লোকজন কাগজ সরবরাহের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়ে স্টোর জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। এটা যদি ফ্যাসিবাদ না হয়, তবে কী?”
নির্বাচন ছাড়া স্থিতিশীলতা আসবে না উল্লেখ করে কাদের বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশে বিনিয়োগ হবে না, কর্মসংস্থান বাড়বে না, বেকারত্ব বাড়বে। অর্থনীতি আরও খারাপ হবে, লুটপাট বাড়বে। মানুষের হাতে টাকা নেই, ব্যবসা নেই, সরকার ট্যাক্স পাচ্ছে না। মালামাল আমদানি করতে পারছে না।”
নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরুদ্ধে রক্ত, ঘৃণা আর কদর্যতার প্রদর্শন করা হলো। আমরা তো সবাইকে একসঙ্গে নিতে চেয়েছিলাম, আজ তারা ঘৃণা ছড়াচ্ছে। আপনারা কত রক্ত চান? সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবিতে তিনি সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।